আপনি নিশ্চইয় বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তাই আমি আজকে আপনাদেরকে বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে করণীয় সম্পর্কে বলবো। তবে যদি আপনার বাচ্চার চোখে খুব সমস্যা দেখা যায়, তাহলে সবচেয়ে ভালো হবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।
বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে করণীয়
বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে করণীয় কি সেটা জেনে নিন নিচের পয়েন্টগুলি থেকে।
- চোখের ময়লা পরিষ্কার করা। প্রতিদিন দিনে কয়েকবার হালকা গরম জল দিয়ে বাচ্চাদের চোখ পরিষ্কার করুন। চোখের কোণ থেকে বাইরের দিকে পরিষ্কার করুন।
- চোখে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করা। যদি চোখ থেকে পুঁজ বা রক্ত পড়ে, তাহলে অবশ্যই চোখে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করুন। চোখের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ড্রপ ব্যবহার করুন।
- নাক পরিষ্কার করা। বাচ্চাদের নাক বন্ধ থাকলে চোখ থেকে পানি পড়ার সমস্যা হতে পারে। তাই বাচ্চাদের নাক পরিষ্কার রাখুন।
- চোখের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। বাচ্চাদের চোখের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চাদের চোখে হাত না দেওয়ার পরামর্শ দিন। চোখে হাত দেওয়ার পর অবশ্যই হাত ধুয়ে নিন।
বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে নিম্নলিখিত লক্ষণ দেখা দিতে পারে:
- চোখ লাল হয়ে যাওয়া
- চোখ থেকে পানি পড়া
- চোখ থেকে পুঁজ বা রক্ত পড়া
- চোখের কোণে ময়লা জমা
- চোখ চুলকানো
- চোখে ব্যথা
যদি আপনার বাচ্চার চোখে কেতুরের লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই একজন চোখের ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। কারন তিনি খুব ভালোমতো বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে করণীয় সম্পর্কে বলতে পারবেন।
বাচ্চাদের চোখে পিচুটি হলে করণীয়
বাচ্চাদের চোখে পিচুটি হলে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে:
- চোখ থেকে পিচুটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিষ্কার করুন। এটি করার জন্য, আপনি একটি নরম কাপড় বা তুলোর প্যাড ব্যবহার করতে পারেন।
- চোখকে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ফোলাভাব এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে।
- চোখের উপর একটি ঠান্ডা চামড়ার প্যাক রাখুন। এটি আরও আরাম দেবে।
- যদি চোখ লাল হয়ে যায় বা জ্বলতে থাকে, তাহলে শিশুকে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে দেখানো উচিত।
বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে করণীয় এবং বাচ্চাদের চোখে পিচুটি হলে করণীয় একই জিনিস।
এখানে কিছু অতিরিক্ত টিপস রয়েছে যা বাচ্চাদের চোখে পিচুটি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে:
- সন্তানের চোখকে ধূলিকণা, ধুলো এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক কণা থেকে রক্ষা করতে একটি সানগ্লাস পরতে বলুন।
- সন্তানের চোখকে আঘাত থেকে রক্ষা করতে একটি নিরাপত্তা চশমা পরতে বলুন।
- সন্তানের চোখের যত্ন নেওয়ার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং প্রচুর পরিমাণে জল পান করতে বলুন।
যদি আপনি আপনার সন্তানের চোখে পিচুটি দেখতে পান, তাহলে উপরের পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন এবং যদি লক্ষণগুলি অব্যাহত থাকে বা খারাপ হয় তবে বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে করণীয় এর জন্য একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।
বাচ্চাদের চোখে কেতুর হয় কেন?
বাচ্চাদের চোখে কেতুর হওয়ার অনেকগুলি কারণ রয়েছে। কিছু সাধারণ কারণ হল:
- অ্যালার্জি: ধুলো, ফুলের রেণু, বা পশুর পশমের মতো অ্যালার্জেনগুলি চোখের জ্বালা এবং কেতুর সৃষ্টি করতে পারে।
- ভাইরাল সংক্রমণ: কনজাক্টিভাইটিস, যেটাকে চোখ ওঠাও বলা হয়, একটি সাধারণ ভাইরাল সংক্রমণ যা চোখে কেতুর, লালভাব এবং চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে।
- ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ: ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, যেমন স্টাফিলোকক্কাল কনজাক্টিভাইটিস, চোখে কেতুর, লালভাব এবং ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
- আঘাত: চোখে আঘাত বা ধুলা বা বালির মতো বিদেশী পদার্থ প্রবেশ করলে চোখে কেতুর হতে পারে।
- অন্যান্য সমস্যা: গ্লুকোমা, অ্যানিমিয়া এবং থাইরয়েড সমস্যার মতো অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যাগুলিও চোখে কেতুর সৃষ্টি করতে পারে।
যদি আপনার সন্তানের চোখে কেতুর হয়, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে দেখা করা গুরুত্বপূর্ণ। তারা আপনার সন্তানের চোখ পরীক্ষা করে নির্ণয় করতে সাহায্য করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারে। তো দেখতে পেলেন কেতুর হওয়া স্বাভাবিক, তাই বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে করণীয় জানা অত্যন্ত জরুরী।
বাচ্চাদের চোখে কেতুর থেকে রক্ষা করার জন্য কিছু টিপস হল:
- অ্যালার্জি এড়ান: আপনার সন্তানের অ্যালার্জি এড়ানোর চেষ্টা করুন, যেমন ধুলো, ফুলের রেণু এবং পশুর পশম।
- হাত ধোয়া: আপনার সন্তানকে তার হাত ঘন ঘন ধুয়ে ফেলতে বলুন, বিশেষ করে খাওয়ার আগে এবং পরে।
- চোখ পরিষ্কার রাখুন: আপনার সন্তানের চোখ ঠান্ডা, পরিষ্কার জল দিয়ে পরিষ্কার রাখুন।
- সূর্য থেকে সুরক্ষা: আপনার সন্তানকে সানস্ক্রিন এবং সানগ্লাস ব্যবহার করতে বলুন যখন সে সূর্যের আলোতে থাকে।
বাচ্চার চোখে দুধ গেলে করণীয়
বাচ্চার চোখে দুধ গেলে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন:
- বাচ্চাকে শান্ত করুন। বাচ্চা যদি কান্নাকাটি করে, তাহলে তাকে শান্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। কান্নাকাটি করলে চোখের জ্বালা আরও বেড়ে যাবে।
- বাচ্চার চোখ থেকে দুধ ধুয়ে ফেলুন। একটি পরিষ্কার তোয়ালে বা তুলোর বল দিয়ে ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে চোখের চারপাশের এলাকা সাবধানে মুছে ফেলুন। চোখের মধ্যে কোনও তুলো বা তোয়ালে ঢুকানোর চেষ্টা করবেন না।
- চোখের চারপাশের এলাকা শুকনো করুন। একটি নরম তোয়ালে ব্যবহার করে চোখের চারপাশের এলাকা শুকনো করুন।
- বাচ্চাকে আরও কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করুন। যদি চোখের জ্বালা বা অন্য কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
শিশুর চোখে কেতুর হলে করণীয়
শিশুর চোখে কেতুর হলে করণীয় নিম্নরূপ:
- শিশুর চোখ পরিষ্কার রাখুন। প্রতিদিন সকালে এবং রাতে শিশুর চোখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। চোখের কোণে জমে থাকা ময়লা তুলা বা নরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন।
- নাক ও চোখের কোণে ম্যাসাজ করুন। প্রতিদিন কয়েকবার শিশুর নাক ও চোখের কোণে হালকা ম্যাসাজ করুন। এতে চোখের নালী পরিষ্কার হয়ে কেতুর সমস্যা দূর হবে।
- চোখের ড্রপ ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে চোখের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চোখের ড্রপ ব্যবহার করুন।
শিশুর চোখে কেতুর হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি এড়িয়ে চলুন:
- চোখে পানি বা কোনো তরল দেবেন না।
- চোখে কোনো ওষুধ বা সাবান ব্যবহার করবেন না।
- চোখের আশেপাশে নোংরা হাত দিয়ে স্পর্শ করবেন না।
শিশুর চোখে কেতুর সাধারণত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায়। তবে যদি সমস্যা বেশি দিন স্থায়ী হয় বা অন্য কোনো উপসর্গ দেখা দেয় তবে অবশ্যই চোখের ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
শিশুর চোখে কেতুরের কিছু সাধারণ কারণ হল:
- নবজাতকের চোখের নালী বন্ধ থাকা।
- চোখের সংক্রমণ।
- চোখের অ্যালার্জি।
- চোখে কোনো আঘাত বা ফরেন বডি প্রবেশ।
- জন্মগত গ্লুকোমা।
শিশুর চোখে কেতুরের চিকিৎসার ক্ষেত্রে চোখের ডাক্তার রোগের কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান করবেন।
নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখবেন:
- বাচ্চাকে চোখ ঘষতে বা টিপতে বারণ করুন। এটি জ্বালা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
- চোখের মধ্যে কোনও ওষুধ বা মলম ব্যবহার করবেন না। এটি ক্ষতিকারক হতে পারে।
- চোখের সমস্যা যদি 24 ঘণ্টার মধ্যে না সেরে যায়, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
বাচ্চাদের চোখে দুধ যাওয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল খাওয়ার সময় বা দুধ খাওয়ানোর সময়। এছাড়াও, বাচ্চারা খেলতে বা ঘুমাতে গিয়ে তাদের চোখে দুধ নিতে পারে।
বাচ্চাদের চোখে পিচুটি দূর করার উপায়
বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে করণীয় কি সেটা জেনে নিন। বাচ্চাদের চোখে পিচুটি দূর করার জন্য নিম্নলিখিত উপায়গুলি অনুসরণ করতে পারেন:
- শিশুর চোখ পরিষ্কার করুন। শিশুর চোখ পরিষ্কার করার জন্য ঠান্ডা নরম কাপড় বা তুলোর বল ব্যবহার করুন। কাপড় বা তুলোর বলটি হালকাভাবে চোখের উপর ঘষুন।
- শিশুর চোখে ঠান্ডা সংকোচন প্রয়োগ করুন। একটি ঠান্ডা তোয়ালে বা ঠান্ডা জলের বোতল দিয়ে শিশুর চোখে ঠান্ডা সংকোচন প্রয়োগ করুন। ঠান্ডা সংকোচনটি প্রায় 10 মিনিটের জন্য প্রয়োগ করুন।
- শিশুর চোখে চোখের ড্রপ ব্যবহার করুন। শিশুর চোখে চোখের ড্রপ ব্যবহার করলে পিচুটি থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারে। চোখের ড্রপ ব্যবহার করার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
- শিশুর চোখের জন্য চশমা ব্যবহার করুন। যদি শিশুর চোখের পিচুটি চোখের সমস্যার কারণে হয়, তাহলে চশমা ব্যবহার করলে পিচুটি থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারে। চশমা ব্যবহার করার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
নিম্নলিখিত টিপসগুলি অনুসরণ করে আপনি শিশুর চোখে পিচুটি প্রতিরোধ করতে পারেন:
- শিশুকে ধুলোবালি থেকে দূরে রাখুন।
- শিশুর চোখ পরিষ্কার রাখুন।
- শিশুকে নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করান।
যদি শিশুর চোখে পিচুটি হয় এবং উপরের উপায়গুলি কাজ না করে, তাহলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
বাচ্চাদের চোখের ময়লা পরিষ্কারের ড্রপ
বাচ্চাদের চোখের ময়লা পরিষ্কার করার জন্য অনেক ধরনের ড্রপ পাওয়া যায়। তবে, কোন ড্রপ সবচেয়ে ভালো তা নির্ভর করে শিশুর চোখের সমস্যার উপর। বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে করণীয় হিসেবে ড্রপ খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে। কিছু সাধারণ ধরনের ড্রপের মধ্যে রয়েছে:
- অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ: এই ড্রপগুলি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে সৃষ্ট চোখের ময়লা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
- স্টেরয়েড ড্রপ: এই ড্রপগুলি প্রদাহজনিত চোখের ময়লা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
- ড্রিপিং ড্রপ: এই ড্রপগুলি চোখের ময়লা তরল করতে এবং সহজেই পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
বাচ্চাদের চোখের ময়লা পরিষ্কার করার জন্য ড্রপ ব্যবহার করার সময়, নিম্নলিখিত টিপসগুলি অনুসরণ করুন:
- হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
- শিশুর চোখের ময়লা পরিষ্কার করার জন্য একটি নরম কাপড় ব্যবহার করুন।
- ড্রপটি শিশুর চোখের কোণে লাগান।
- শিশুর চোখের পাতা বন্ধ করুন এবং কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন।
- শিশুর চোখের কোণ থেকে বাইরের দিকে আলতো করে ঘষুন।
যদি আপনার সন্তানের চোখের ময়লা পরিষ্কার না হয়, বা যদি তাদের চোখে কোনও ব্যথা বা অস্বস্তি হয়, তাহলে একজন চোখের ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। তিনি বাচ্চাদের চোখে কেতুর হলে করণীয় ভালোভাবে বলতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ পিজি হাসপাতালের ডাক্তারদের তালিকা, প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ