দোয়া আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলেই খুব ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই দোয়া আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে দোয়া আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি সম্পর্কে বলবো। তো চলুন শুরু করা যাক।

দোয়া আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি

দোয়া আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজানি

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজানি, ওয়াল আজজি ওয়াল কাসালি, ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখলি, ওয়া দ্বলাইদ দাইনি, ওয়া গালাবাতির রিজাল।

অর্থ: হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি, অক্ষমতা ও অলসতা, কাপুরুষতা ও কৃপণতা, ঋণভার ও মানুষের প্রভাবাধীন হওয়া থেকে।

হাদিস

  • রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি সকালে এই দোয়া পাঠ করবে, তার দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি দূর হয়ে যাবে।” (তিরমিযী, হাদিস: ৩৫২৯)
  • আবু উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে বললেন, তুমি কি দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি থেকে মুক্তি পেতে চাও? তুমি সকালে এই দোয়া পাঠ করো।” (তিরমিযী, হাদিস: ৩৫৩০)

ফজিলত

এই দোয়া পাঠ করলে দুশ্চিন্তা, পেরেশানি, অক্ষমতা, অলসতা, কাপুরুষতা, কৃপণতা, ঋণভার ও মানুষের প্রভাবাধীন হওয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল কুফরি ওয়াল ফাকরি

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল কুফরি ওয়াল ফাকরি

দোয়া আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল কুফরি ওয়াল ফাকরি

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল কুফরি ওয়াল ফাকরি, ওয়া আউজুবিকা মিন আজাবিল ক্বাবরি।

অর্থ: হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই কুফর ও দারিদ্র্য থেকে, এবং আশ্রয় চাই কবরবাসীর আযাব থেকে।

হাদিস

  • রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি সকালে তিনবার বলবে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল কুফরি ওয়াল ফাকরি, ওয়া আউজুবিকা মিন আজাবিল ক্বাবরি’, তার উপর কুফর ও দারিদ্র্য কখনো আসবে না।” (তিরমিযী, হাদিস: ৩৫৩১)
আরো পড়ুনঃ  ইস্তেখারার দোয়া বাংলা উচ্চারণ

ফজিলত

এই দোয়া পাঠ করলে কুফর, দারিদ্র্য ও কবরবাসীর আযাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এই দোয়াটি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রতিদিন সকালে পাঠ করতেন। তিনি সাহাবাদেরকেও এই দোয়াটি পাঠ করতে বলতেন। এই দোয়াটিতে তিনটি জিনিস থেকে আশ্রয় চাওয়া হয়েছে:

  • কুফর: কুফর হলো আল্লাহর প্রতি ঈমান না রাখা। কুফর থেকে আশ্রয় চাওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখার শক্তি ও সাহস চেয়ে নেওয়া।
  • দারিদ্র্য: দারিদ্র্য হলো অভাব-অনটন। দারিদ্র্য থেকে আশ্রয় চাওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর কাছে রিযিকের চাহিদা জানানো।
  • কবরবাসীর আযাব: কবরবাসীর আযাব হলো কবরস্থিত ব্যক্তির আযাব। কবরবাসীর আযাব থেকে আশ্রয় চাওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর কাছে কবরবাসীর আযাব থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা।

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কবর

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কবর

দোয়া আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কবর

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল ক্বাবরি, ওয়া মিন আজাবিন নারি, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাহ্ইয়া ওয়াল মামা-তি, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাসীহিদ্দাজ্জাল।

অর্থ: হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই কবরের আযাব থেকে, জাহান্নামের আযাব থেকে, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে, এবং দাজ্জালের ফিতনা থেকে।

হাদিস

  • রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি সকালে ও সন্ধ্যায় এই দোয়া তিনবার পাঠ করবে, তার উপর কবরের আযাব, জাহান্নামের আযাব, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা, এবং দাজ্জালের ফিতনা আসবে না।” (বুখারী, হাদিস: ৬৩১৬)

ফজিলত

এই দোয়া পাঠ করলে কবরের আযাব, জাহান্নামের আযাব, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা, এবং দাজ্জালের ফিতনা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এই দোয়াটি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় পাঠ করতেন। তিনি সাহাবাদেরকেও এই দোয়াটি পাঠ করতে বলতেন। এই দোয়াটিতে চারটি জিনিস থেকে আশ্রয় চাওয়া হয়েছে:

  • কবরের আযাব: কবরের আযাব হলো কবরস্থিত ব্যক্তির আযাব। কবরের আযাব থেকে আশ্রয় চাওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর কাছে কবরের আযাব থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা।
  • জাহান্নামের আযাব: জাহান্নামের আযাব হলো আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণে জাহান্নামে যাওয়ার পর পাওয়া আযাব। জাহান্নামের আযাব থেকে আশ্রয় চাওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর কাছে জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা।
  • জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা: জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা হলো জীবন ও মৃত্যুর সময় পাওয়া ফিতনা। জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে আশ্রয় চাওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর কাছে জীবন ও মৃত্যুর সময় পাওয়া ফিতনা থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা।
  • দাজ্জালের ফিতনা: দাজ্জাল হলো একজন মিথ্যা নবী, যিনি কিয়ামতের আগে পৃথিবীতে আবির্ভূত হবেন। দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর কাছে দাজ্জালের ফিতনা থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা।
আরো পড়ুনঃ  ইসলামিক স্ট্যাটাস উপদেশ মূলক কথা

এই দোয়াটি পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে কবরের আযাব, জাহান্নামের আযাব, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা, এবং দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা করবেন।

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল বারাসি ওয়াল জুজামি

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল বারাসি ওয়াল জুজামি

দোয়া আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল বারাসি ওয়াল জুজামি

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল বারাসি ওয়াল জুজামি, ওয়া মিন জুজামিল জুজামি, ওয়া মিন ছাইয়্যিইল আসক্বামি।

অর্থ: হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই ধবল রোগ, কুষ্ঠরোগ, এবং সকল প্রকার কঠিন ব্যাধি থেকে।

হাদিস

  • আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় এই দোয়া তিনবার পাঠ করতেন।” (বুখারী, হাদিস: ৫৫২৩)

ফজিলত

এই দোয়া পাঠ করলে ধবল রোগ, কুষ্ঠরোগ, এবং সকল প্রকার কঠিন ব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এই দোয়াটি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় পাঠ করতেন। তিনি সাহাবাদেরকেও এই দোয়াটি পাঠ করতে বলতেন। এই দোয়াটিতে তিনটি জিনিস থেকে আশ্রয় চাওয়া হয়েছে:

  • ধবল রোগ: ধবল রোগ হলো একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যাতে ত্বক সাদা হয়ে যায়। ধবল রোগ থেকে আশ্রয় চাওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর কাছে ধবল রোগ থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা।
  • কুষ্ঠরোগ: কুষ্ঠরোগ হলো একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যাতে ত্বক ও হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কুষ্ঠরোগ থেকে আশ্রয় চাওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর কাছে কুষ্ঠরোগ থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা।
  • সকল প্রকার কঠিন ব্যাধি: সকল প্রকার কঠিন ব্যাধি হলো এমন সব ব্যাধি, যা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। সকল প্রকার কঠিন ব্যাধি থেকে আশ্রয় চাওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর কাছে সকল প্রকার কঠিন ব্যাধি থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা।

এই দোয়াটি পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ধবল রোগ, কুষ্ঠরোগ, এবং সকল প্রকার কঠিন ব্যাধি থেকে রক্ষা করবেন।

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বুসি ওয়াত তাবাউস

দোয়া আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বুসি ওয়াত তাবাউস

আরো পড়ুনঃ  আল্লাহুম্মা বারিক লাহু অর্থ

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বুসি ওয়াত তাবাউস।

অর্থ: হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই কুৎসিততা ও পাপ থেকে।

হাদিস

  • আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় এই দোয়া তিনবার পাঠ করতেন।” (বুখারী, হাদিস: ৫৫২৪)

ফজিলত

এই দোয়া পাঠ করলে কুৎসিততা ও পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

এই দোয়াটি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় পাঠ করতেন। তিনি সাহাবাদেরকেও এই দোয়াটি পাঠ করতে বলতেন। এই দোয়াটিতে দুটি জিনিস থেকে আশ্রয় চাওয়া হয়েছে:

  • কুৎসিততা: কুৎসিততা হলো এমন সব কাজ, যা আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয়। কুৎসিততা থেকে আশ্রয় চাওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর কাছে কুৎসিত কাজ থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা।
  • পাপ: পাপ হলো এমন সব কাজ, যা আল্লাহর বিধানের পরিপন্থী। পাপ থেকে আশ্রয় চাওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর কাছে পাপ থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা।

এই দোয়াটি পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে কুৎসিততা ও পাপ থেকে রক্ষা করবেন।

পরিশেষে

আমি আশা করছি আপনারা আপনাদের দোয়া আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি এই প্রশ্নের উওর পেয়েছেন। আরো কিছু জানার থাকলে নিচে কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

আরো পড়ুনঃ অযুর দোয়া ও নিয়ত বাংলা উচ্চারণ সহ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top