হ্যালো পাঠক, আজকে আমি আপনাদেরকে আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল, আলহামদুলিল্লাহ অর্থ কি, সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ পিকচার, আলহামদুলিল্লাহ কখন বলতে হয় এইগুলি সম্পর্কে জানবো। তো চলুন শুরু করা যাক আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল।
আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল অর্থ কি
আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল এর অর্থ হল “সকল অবস্থায় আল্লাহর প্রশংসা”। এটি একটি আরবি বাক্যাংশ যা ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থনা বা দোয়া হিসাবে বিবেচিত হয়। এটি যেকোনো পরিস্থিতিতে, ভাল বা খারাপ, আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার একটি উপায়।
এই বাক্যাংশটি দুটি শব্দ নিয়ে গঠিত:
- আলহামদুলিল্লাহ – অর্থ “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য”
- আলা কুল্লি হাল – অর্থ “সকল অবস্থায়”
এই বাক্যাংশটি বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন:
- ভালো কিছু ঘটার পর আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে
- খারাপ কিছু ঘটার পর ধৈর্য ধরতে এবং আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখতে
- আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে
আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল একটি গুরুত্বপূর্ণ বাক্যাংশ যা মুসলমানদেরকে তাদের জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে উৎসাহিত করে।
এখানে কিছু উদাহরণ রয়েছে কিভাবে আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল ব্যবহার করা যেতে পারে:
- একজন ব্যক্তি একটি নতুন চাকরি পাওয়ার পরে বলতে পারে, “আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল। আল্লাহর রহমতে আমি এই চাকরি পেয়েছি।”
- একজন ব্যক্তি একটি দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়ার পরে বলতে পারে, “আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল। আল্লাহর কৃপায় আমি এই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেছি।”
- একজন ব্যক্তি একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পরে বলতে পারে, “আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল। আমি জানি আল্লাহ আমার সাথে আছেন এবং তিনি আমাকে এই কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে সাহায্য করবেন।”
আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল একটি শক্তিশালী বাক্যাংশ যা মুসলমানদেরকে তাদের জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে এবং তাঁর উপর আস্থা রাখতে সাহায্য করতে পারে।
আলহামদুলিল্লাহ অর্থ কি
আলহামদুলিল্লাহ (আরবি: ٱلْحَمْدُ لِلَّٰهِ, al-Ḥamdu lillāh) একটি আরবি বাক্যাংশ যার অর্থ “সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য”। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী শব্দ যা মুসলমানরা প্রায়শই ব্যবহার করে।
“আলহামদুলিল্লাহ” শব্দটি দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত:
- “হামদ” (الحمد) অর্থ “প্রশংসা”
- “লিল্লাহ” (لله) অর্থ “আল্লাহর জন্য”
সুতরাং, “আলহামদুলিল্লাহ” শব্দের অর্থ হল “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য”। এটি একটি সাধারণ উপায় যা মুসলমানরা আল্লাহকে তাঁর সৃষ্টি, রহমত এবং অনুগ্রহের জন্য ধন্যবাদ জানাতে ব্যবহার করে।
সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ

সুবহানাল্লাহ – আল্লাহ পবিত্র। আলহামদুলিল্লাহ – সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
এই দুটি শব্দ ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাক্যগুলির মধ্যে রয়েছে। সুবহানাল্লাহ আল্লাহর পবিত্রতা এবং মহত্ত্বের স্বীকৃতি। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর কাছে সমস্ত প্রশংসা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
এই বাক্যগুলি প্রায়ই প্রার্থনা, ধন্যবাদ, এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত হয়। এগুলি জীবনের যেকোনো সময়ে বলা যেতে পারে, এবং এগুলি মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক অনুশীলন।
সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ বলার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এটি আমাদের মনে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস এবং ভক্তি শক্তিশালী করতে সাহায্য করতে পারে। এটি আমাদের ধৈর্য, প্রশান্তি এবং ক্ষমাশীলতা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করতে পারে।
সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ বলা একটি সহজ কাজ, কিন্তু এটি একটি শক্তিশালী ইবাদত। এটি আমাদের জীবনে আল্লাহর উপস্থিতি অনুভব করতে এবং তাঁর সাথে আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সাহায্য করতে পারে।
আলহামদুলিল্লাহ পিকচার
আলহামদুলিল্লাহ একটি আরবি শব্দ যার অর্থ “সমস্ত প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা আল্লাহর জন্য”। এটি একটি সাধারণ ইসলামী শব্দ যা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ব্যবহৃত হয়।
আলহামদুলিল্লাহ পিকচারগুলি সাধারণত আরবিতে “আলহামদুলিল্লাহ” লেখা হয়। এগুলি বিভিন্ন শৈলীতে পাওয়া যায়, যার মধ্যে রয়েছে ক্যালিগ্রাফি, পেইন্টিং এবং ফটোগ্রাফি।
আলহামদুলিল্লাহ কখন বলতে হয়
আলহামদুলিল্লাহ বলার সময়সমূহ নিম্নরূপ:
- প্রত্যেক ভালো খবর শুনে। যেমন, কারো সুস্থতা, কারো বিয়ে, কারো সন্তান জন্ম, কারো নতুন চাকরি, ইত্যাদি।
- কোনো ভালো কাজ সম্পন্ন করে। যেমন, নামাজ পড়ে, রোজা রাখে, হজ করে, ইত্যাদি।
- কোনো বিপদ থেকে বাঁচার পর। যেমন, কোনো দুর্ঘটনা থেকে বাঁচলে, কোনো অসুস্থতা থেকে সুস্থ হলে, ইত্যাদি।
- কোনো নেয়মতের কথা স্মরণ করে। যেমন, স্বাস্থ্য, সম্পদ, পরিবার, ইত্যাদি।
- কোনো নেয়মতের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। যেমন, আল্লাহর কাছে দোয়া করে, দান-খয়রাত করে, ইত্যাদি।
এছাড়াও, সারাদিনের বিভিন্ন সময়ে আল্লাহর প্রশংসা করে আলহামদুলিল্লাহ বলা যেতে পারে। যেমন, সকালে ঘুম থেকে উঠে, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময়, খাবার খাওয়ার সময়, কোনো কাজে সাফল্য লাভের পর, ইত্যাদি।
আলহামদুলিল্লাহ বলা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। এটি বলার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি এবং আমাদের হৃদয়কে আল্লাহর ভালোবাসায় পরিপূর্ণ করি।
সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার
অর্থ:
- সুবহানাল্লাহ: আল্লাহ পবিত্র।
- আলহামদুলিল্লাহ: সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু: আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই।
- আল্লাহু আকবার: আল্লাহ তাআলাই মহান (সবচেয়ে বড়)।
তাৎপর্য:
এই চারটি বাক্য ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাক্য। এগুলো আল্লাহর গুণাবলী ও একত্ববাদের বর্ণনা দেয়।
- সুবহানাল্লাহ বাক্যটি আল্লাহর পবিত্রতা ও অখণ্ডতা প্রকাশ করে।
- আলহামদুলিল্লাহ বাক্যটি আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু বাক্যটি আল্লাহর একত্ববাদ ও অদ্বিতীয়তা প্রকাশ করে।
- আল্লাহু আকবার বাক্যটি আল্লাহর মহানত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করে।
ফজিলত:
এই চারটি বাক্য আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়। হাদিসে বর্ণিত আছে, এই চারটি বাক্য পাঠ করলে বান্দার গুনাহ মাফ হয় এবং তার জন্য নেক আমলের সওয়াব লেখা হয়।
আবেদন:
আল্লাহ আমাদেরকে এই চারটি বাক্য বেশি বেশি পাঠ করার তাওফিক দান করুন। আমাদেরকে আল্লাহর পথে চলার এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের তাওফিক দান করুন।
সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহু আকবার অর্থ
সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার হল ইসলামের চারটি মূল তাসবিহ বা জিকির। এগুলো আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগানের বাক্য।
- সুবহানাল্লাহ এর অর্থ হল “আল্লাহ পবিত্র”। এই বাক্যটি আল্লাহর পবিত্রতা ও সম্মানের ঘোষণা।
- আলহামদুলিল্লাহ এর অর্থ হল “সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য”। এই বাক্যটি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতার প্রকাশ।
- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর অর্থ হল “আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই”। এই বাক্যটি আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা।
- আল্লাহু আকবার এর অর্থ হল “আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ”। এই বাক্যটি আল্লাহর মহানত্বের প্রকাশ।
এই চারটি তাসবিহ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল। এগুলো পড়লে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আমার কাছে দুনিয়ার সবকিছু থেকেও বেশি প্রিয় হলো সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার বলা।”
এই চারটি তাসবিহ বিভিন্ন সময়ে পড়া যায়। যেমন:
- নামাজের মধ্যে
- নামাজের বাইরে
- কোরআন তিলাওয়াতের সময়
- দুআ করার সময়
- কোনো ভালো কাজের শুরু ও শেষে
- কোনো বিপদ-আপদ থেকে বাঁচার জন্য
এই চারটি তাসবিহ পড়লে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়, পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, দুঃখ-কষ্ট দূর হয় এবং হায়াত বৃদ্ধি পায়।
উপসংহার
আপনারা হয়তো এতোক্ষণে আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল অর্থ কি তা জেনে গেছেন। এইটির সাথে যদি আপনাদের কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ জান্নাতের বাগানের নাম
জাজাকাল্লাহু খাইরান
জাজাকাল্লাহু খাইরান