প্রশ্নঃ মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম কি?
(ক) হোমো ইরেকটাস
(খ) হোমো স্যাপিয়েন্স
(গ) হোমো হ্যাবিলস
(ঘ) হোমো নেয়াল্ডারথালিস
উত্তরঃ হোমো স্যাপিয়েন্স
মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম কি? মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম হল হোমো স্যাপিয়েন্স। এটি গ্রীক শব্দ “হোমো” (মানুষ) থেকে এসেছে এবং “স্যাপিয়েন্স” (জ্ঞানী)। হোমো স্যাপিয়েন্স হল হোমিনিড পরিবারের সদস্য, যাতে শিম্পাঞ্জি, গোরিলা এবং ওরাংওটাংও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। হোমো স্যাপিয়েন্স প্রায় 300,000 বছর আগে আফ্রিকায় বিবর্তিত হয়েছিল এবং পৃথিবীর সমস্ত মহাদেশে বসতি স্থাপন করেছে।
হোমো স্যাপিয়েন্সের শ্রেণীবিন্যাস
মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম কি এবং শ্রেণীবিন্যাস? হোমো স্যাপিয়েন্সের শ্রেণীবিন্যাস হল:
- রাজ্য: Animalia
- সাব-রাজ্য: Eumetazoa
- ইনফ্রা-রাজ্য: Chordata
- ক্লাস: Mammalia
- অর্ডার: Primates
- পরিবার: Hominidae
- উপ-পরিবার: Homininae
- গণ: Homo
- প্রজাতি: Homo sapiens
হোমো স্যাপিয়েন্সের কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল:
- বুদ্ধিমান
- দক্ষ হাত
- দাঁড়িয়ে হাঁটার ক্ষমতা
- ভাষা
- যৌথ প্রযুক্তি ব্যবহার
- শিল্প
- সংস্কৃতি
হোমো স্যাপিয়েন্সের উপ-প্রজাতি
হোমো স্যাপিয়েন্সের অনেক উপ-প্রজাতি ছিল, যার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হল নিয়ান্ডারথালস। নিয়ান্ডারথালস ছিল একটি শক্তিশালী, লোমশ মানুষ যারা ইউরোপ এবং এশিয়ায় বসবাস করত। তারা প্রায় ৪০,০০০ বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায়।
অন্যান্য হোমো স্যাপিয়েন্সের উপ-প্রজাতির মধ্যে রয়েছে:
- হোমো ইরাক্টিস: এরা আফ্রিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ায় বসবাস করত। তারা প্রায় ৮০,০০০ বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায়।
- হোমো হাইডেলবার্গেনসিস: এরা আফ্রিকা এবং ইউরোপের কিছু অংশে বসবাস করত। তারা প্রায় ৬০০,০০০ বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায়।
- হোমো রুডলফেন্সিস: এরা আফ্রিকায় বসবাস করত। তারা প্রায় ১০০,০০০ বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায়।
এই উপ-প্রজাতির প্রত্যেকটির নিজস্ব অনন্য শারীরিক বৈশিষ্ট্য ছিল। উদাহরণস্বরূপ, নিয়ান্ডারথালদের বড় মস্তিষ্ক, ঘন হাড় এবং শীতকালে বেঁচে থাকার জন্য বিশেষ অভিযোজন ছিল।
মানুষের উৎপত্তি কোথা থেকে
মানুষের উৎপত্তি একটি জটিল এবং বিতর্কিত বিষয়, যা এখনও বিজ্ঞানীদের দ্বারা গবেষণা করা হচ্ছে। তবে, সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য তত্ত্ব হল যে মানুষ আফ্রিকায় উৎপন্ন হয়েছিল। এই তত্ত্বের সমর্থনে অনেক প্রমাণ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
- আফ্রিকায় প্রাচীনতম হোমিনিড (মানব-সদৃশ প্রাণী) জীবাশ্ম পাওয়া গেছে।
- আফ্রিকান হোমিনিডগুলিতে মানব বিবর্তনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলির বিবর্তন দেখা যায়।
- আফ্রিকান হোমিনিডগুলির সাথে বর্তমানের মানুষের জিনোমগুলির একটি উচ্চ ডিগ্রি মিল রয়েছে।
মানুষের উৎপত্তি সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা হল যে, আনুমানিক ৩ থেকে ৪ মিলিয়ন বছর আগে, আফ্রিকায় একটি বানর প্রজাতি, যারা ছিল গরিলা এবং শিম্পাঞ্জির পূর্বপুরুষ, তারা দাঁড়িয়ে চলাচল করা শুরু করে। এই পরিবর্তন তাদের পরিবেশের সাথে আরও ভালভাবে খাপ খাইয়ে নিতে এবং আরও বেশি খাদ্য গ্রহণ করতে সাহায্য করে।
মানুষ কোন শ্রেণীর প্রাণী
মানুষ স্তন্যপায়ী শ্রেণীর প্রাণী। স্তন্যপায়ী প্রাণী হলো এমন প্রাণী যাদের শরীরে পশম বা চুল থাকে, স্তনগ্রন্থি থাকে যা থেকে তারা তাদের বাচ্চাদের দুধ পান করায়, এবং তাদের মধ্যকর্ণে তিনটি হাড় থাকে। মানুষ এই সকল বৈশিষ্ট্য ধারণ করে, তাই তারা স্তন্যপায়ী প্রাণী হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ।
স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আরও কিছু বৈশিষ্ট্য হলো:
- তারা উষ্ণ রক্তের প্রাণী।
- তাদের চার-কক্ষ বিশিষ্ট হৃৎপিণ্ড থাকে।
- তাদের বুদ্ধি ও বুদ্ধিমত্তা বেশি থাকে।
- তারা জটিল আচরণ প্রদর্শন করতে সক্ষম।
মানুষ স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী। তারা ভাষা ব্যবহার করতে পারে, যন্ত্রপাতি তৈরি করতে পারে, এবং জটিল সমাজে বসবাস করতে পারে।
আরো পড়ুনঃ রক্ত আমাশয়ের ঔষধের নাম