https://jobbd.org/%e0%a6%9f%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%a8%e0%a7%80%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%95%e0%a6%bf/
ট্রুম্যান নীতি কি
ট্রুম্যান নীতি হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস. ট্রুম্যানের দ্বারা ১৯৪৭ সালে ঘোষিত একটি নীতি যা বলছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো দেশকে সাম্যবাদের বিরুদ্ধে সহায়তা করবে যা সাম্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ট্রুম্যান নীতিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্যবাদ-বিরোধী নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হয়ে ওঠে এবং এটি ঠান্ডা যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির একটি মূল ভিত্তি হয়ে ওঠে।
ট্রুম্যান নীতিটি ১৯৪৭ সালের মার্চ মাসে গ্রীস এবং তুরস্কের জন্য মার্কিন সহায়তার জন্য একটি প্রতিনিধি পরিষদে দেওয়া ট্রুম্যানের ভাষণে ঘোষিত হয়েছিল। ভাষণে, ট্রুম্যান বলেছিলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাম্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যেকোনো দেশকে সহায়তা করবে। তিনি বিশেষভাবে গ্রীস এবং তুরস্কের উল্লেখ করেছিলেন, যেখানে সাম্যবাদী বিদ্রোহীরা সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করছিল।ট্রুম্যান নীতি কি
ট্রুম্যান নীতির ফলস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গ্রীস এবং তুরস্ককে সামরিক এবং অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করে। এই সহায়তায় গ্রীসের সাম্যবাদী বিদ্রোহ দমন এবং তুরস্কের সাম্যবাদী হুমকি মোকাবেলায় সহায়তা করে।
ট্রুম্যান নীতিটি ঠান্ডা যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির একটি মূল ভিত্তি হয়ে ওঠে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সাম্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি নীতিগত ভিত্তি প্রদান করে। ট্রুম্যান নীতির ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে সামরিক এবং অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করে।
ট্রুম্যান নীতির কিছু সমালোচক বলেছেন যে এটি সাম্যবাদ-বিরোধী উন্মাদনাকে উৎসাহিত করেছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে দিয়েছে। তবে, ট্রুম্যান নীতির সমর্থকরা বলেছেন যে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং বিশ্বজুড়ে সাম্যবাদের বিস্তার রোধে সহায়তা করেছে।ট্রুম্যান নীতি কি
ট্রুম্যান কিভাবে প্রেসিডেন্ট হন
হ্যারি এস. ট্রুম্যান ১৯৪৫ সালের ১২ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৩তম প্রেসিডেন্ট হন, যখন তার পূর্বসূরী ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট মারা যান। ট্রুম্যান তখন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
রুজভেল্টের মৃত্যুর পর, ট্রুম্যানকে অবিলম্বে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিতে হয়েছিল। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেন। তিনি জাপানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক বোমা হামলা অনুমোদন করেন এবং জাপানকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেন।ট্রুম্যান নীতি কি
১৯৪৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে, ট্রুম্যান রিপাবলিকান প্রার্থী টমাস ডি. ডেভিসের বিরুদ্ধে জয়ী হন। ট্রুম্যানের জয় ছিল একটি বড় অপ্রত্যাশিত ঘটনা, কারণ অনেকেই ভেবেছিলেন যে ডেভিস ট্রুম্যানকে পরাজিত করবেন।
ট্রুম্যানের দ্বিতীয় মেয়াদে, তিনি ঠান্ডা যুদ্ধের সূচনা দেখতে পান। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্যবাদ-বিরোধী নীতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ট্রুম্যান নীতি ঘোষণা করেন, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সাম্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যেকোনো দেশকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
ট্রুম্যান ১৯৫৩ সালে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি ১৯৭২ সালে ৮৮ বছর বয়সে মারা যান।
ট্রুম্যানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার কারণগুলি নিম্নরূপ:
- তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য ছিলেন, যা সেই সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান রাজনৈতিক দল ছিল।
- তিনি ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্টের অধীনে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করেছিলেন, যিনি তখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ছিলেন।ট্রুম্যান নীতি কি
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ট্রুম্যান প্রশংসা অর্জন করেছিলেন।
- ১৯৪৮ সালের নির্বাচনে, ট্রুম্যান রিপাবলিকান প্রার্থী টমাস ডি. ডেভিসের বিরুদ্ধে একটি টেবিল-টপার জয় অর্জন করেছিলেন।
ট্রুম্যান মতবাদ কি শীতল যুদ্ধের সূচনা করেছিল
ট্রুম্যান মতবাদ ঠান্ডা যুদ্ধের সূচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল, তবে এটি একমাত্র কারণ ছিল না। ঠান্ডা যুদ্ধের সূচনায় অনেকগুলি কারণ জড়িত ছিল, যার মধ্যে রয়েছে:
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের রাজনৈতিক জলবায়ু। যুদ্ধের পর, বিশ্ব দুটি প্রধান শক্তির মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন। এই দুটি শক্তিই ছিল সাম্যবাদী এবং পুঁজিবাদী মতাদর্শের প্রতিদ্বন্দ্বী।
- সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক শক্তির বৃদ্ধি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সামরিক শক্তি হয়ে ওঠে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বড় হুমকি হিসাবে দেখা হয়েছিল।
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্যবাদ-বিরোধী মনোভাব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক নেতাই সাম্যবাদকে একটি হুমকি হিসাবে দেখতেন। তারা বিশ্বাস করতেন যে সাম্যবাদের বিস্তার রোধ করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
ট্রুম্যান মতবাদ এই কারণগুলিকে আরও জটিল করে তুলেছিল। মতবাদটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সাম্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যেকোনো দেশকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসাবে দেখা হয়েছিল এবং এটি ঠান্ডা যুদ্ধের উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।ট্রুম্যান নীতি কি
ট্রুম্যান মতবাদের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে সামরিক এবং অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করে। এই সহায়তা সাম্যবাদের বিস্তার রোধে সহায়তা করে, কিন্তু এটি ঠান্ডা যুদ্ধকে আরও দীর্ঘায়িত করে তোলে।ট্রুম্যান নীতি কি